ছবি সংগৃহীত
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় সাড়ে ৯ বছর আগে ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কবির হোসেন রনিকে ক্রসফায়ার ও এনকাউন্টারের মাধ্যমে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফুফাতো ভাই এবং বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ডিআইজি, এসপিসহ পুলিশের ৫ কর্মকর্তা এবং অর্ধশতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়।
আজ বরিশালের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে ছাত্রদল নেতার ছেলে মামলাটি করেছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম পান্না।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. মোখলেচুর রহমান মামলাটি এজাহার রুজু করার জন্য আগৈলঝাড়া থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে বেঞ্চ সহকারী সৈয়দ আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন।
মামলার বাদী হলেন-ক্রসফায়ারে নিহত ছাত্রদল নেতা কবির হোসেন রনির ছেলে আশিকুর রহমান আসিফ
(২০)।
আসামীরা হলো-বরিশাল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, আগৈলঝাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খান ও আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ লিটন সেরনিয়াবাত, বরিশাল রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি মো. হুমায়ন কবির, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি আকরাম হোসেন, বরিশাল জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. এহসানউল্যাহ, সাবেক সহকারী পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর মল্লিক, আগৈলঝাড়া থানার সাবেক ওসি মনিরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস ছাত্তার মোল্লা, সৈয়দ আশরাফ মিয়া, মামুন কবিরাজ, অনিমেষ মন্ডল ও স্বপন মন্ডল।
মামলায় অজ্ঞাত আরও ৪০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার বরাতে আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম পান্না জানান, মামলার আসামী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, মোর্তুজা খান, রইচ সেরনিয়াবাত ও আবুল সালেহ লিটন মোল্লাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা গত ১৫ বছর ধরে সমগ্র জেলাকে একটি নৈরাজ্যের জনপদ এবং ভয়াল উপত্যকায় পরিণত করেন।
রাজনৈতিকভাবে বাদীর বাবা কবির হোসেন রনি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। আসামী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে বাদীর বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্ররোচনায় পুলিশ কর্মকর্তারা ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী ছাত্রদল নেতা রনিকে ঢাকার নবীনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে ছাত্রদল নেতাকে অমানুষিক নির্যাতন করে। ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী রাত আড়াইটার দিকে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাইপাস ব্রীজের পশ্চিম পাশে রাস্তায় ছাত্রদল নেতা রনিকে গুলি করে হত্যা করে। পরে সকল আসামীরা বিষয়টি একযোগে ক্রসফায়ার ও এনকাউন্টার নামে প্রচারণা চালায়। আসামীদের ভয়ে মামলা করতে সাহস পায়নি বাদীর পরিবার। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে নিজের নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে আদালতে মামলা করেন বাদী।
মামলায় বাদী আরও উল্লেখ করেন, প্রধান আসামী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ১৯৭৪ সালে বিএম কলেজের ছাত্র নজরুল, সদরুল ও সমরেশকে রাতের আধারে গুন্ডাবাহিনী দিয়ে খুন করে।